রিয়েলমি সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য জানব আমরা
রিয়েলমি অল্পদিনেই আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিটি। অপো, ভিভো ও ওয়ানপ্লাস এর প্যারেন্ট কোম্পানি, চীনা বিবিকে ইলেক্ট্রনিকস থেকেই এই উত্থান রিয়েলমির। প্রথমদিকে অপোর নামে পরিচিত হলেও পরবর্তিতে অর্থাত বর্তমানে নিজেদের ব্র্যান্ড বেশ শক্তভাবেই প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছে এই রিয়েলমি প্রতিষ্ঠানটি।
এখন বর্তমানে লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডে পরিণত হলেও স্মার্টফোন দিয়ে যাত্রা শুরু করে রিয়েলমি । বর্তমানে বাজারে রিয়েলমি ব্র্যান্ডেড অনেক প্রোডাক্ট পাওয়ার ব্যাংক, ইয়ারফোন, টিভি সহ অসংখ্য ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং ফিচারের কারণে আলোচনায় এবং জনপ্রিয়তা লাভ করতে থাকে রিয়েলমি ডিভাইসগুলো।
সল্প মূল্যয় অসাধারণ সব স্মার্টফোন বাজারে এনে বাংলাদেশ ও ভারতে গ্রাহকের মনে জায়গা করে নিয়েছে এই রিয়েলমি। ২০১৮ সালের মে মাসের ৪ তারিখ অফিসিয়ালি যাত্রা শুরু করে স্মার্টফোন ব্র্যান্ডটি। ২০১৮ সালের মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে রিয়েলমি যাত্রা শুরু করলেও রিয়েলমির লোগো উন্মোচন করা হয় নভেম্বরের ১৫ তারিখে। অর্থাৎ রিয়েলমির যাত্রার প্রায় ৬মাস পরে এটির লোগো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়, যা অদ্ভুত হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
এই গল্পের শুরু কিন্তু ২০১০ সালেই কিন্তু ২০১৮ সালে অফিসিয়ালি রিয়েলমি তাদের কার্যক্রম শুরু করে । সেই বছর “অপো রিয়েল” নামে একটি ফিচার ফোন বাজারে আনে অপো। এর পর ২০১৮ সালে ভারতে রিয়েলমি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড, রিয়েলমি সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য।
বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধিপ্রাপ্ত স্মার্টফোন কোম্পানি হচ্ছে রিয়েলমি
যখনি তাদের যাত্রার শুরু করে মাত্র দুই বছরের মাথায়, অর্থাৎ ২০২০ সালেই ৫০মিলিয়ন ফোন বিক্রির মাইলফলক অতিক্রম করে রিয়েলমি স্মার্টফোন এই ব্র্যান্ডটি। আমাদের বাংলাদেশেও শাওমি কোম্পানির বাজেট স্মার্টফোন সিরিজ, রেডমি এর সাথে বেশ ভালোই প্রতিযোগতায় আছে এই কোম্পানিটির। প্রথম ১০০ মিলিয়ন স্মার্টফোন বিক্রি করতে রিয়েলমির লেগেছে মাত্র ৩৭ মাস, যা বিশ্বরেকর্ড এ পরিনত হয়।
প্রথমেই কিন্তু রিয়েলমি অপো এর সাব-ব্র্যান্ড হিসেবে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে রিয়েলমিকে আলাদা করে স্বাধীন ব্র্যান্ড হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও রিয়েলমি ও অপো, একে অপরের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে।
রিয়েলমির প্রথম ফোন ছিল অপোর তৈরি করা
আপনু শুনলে অবাক হতে পারেন যে রিয়েলমি এর প্রথম প্রোডাক্ট, রিয়েলমি ১ কিন্তু রিয়েলমি এর নিজের তৈরী ফোন ছিলোনা তখন। এই ফোনটি মূলত অপো এর অপো এফ৭ ইয়ুথ এডিশন এর রিব্র্যান্ডেড ভার্সন ছলো, এমনকি রিয়েলমি ২ ফোনটি নিয়েও অনেকেই এমন মন্তব্য করেছেন যে এটি আসলে অপো এএক্স৫ এর রিব্র্যান্ডেড ভার্সন ছিল। তবে যাই হয়ে থাক শুরুতে তারা নিজেদের মধ্য থেকে এমন একটু সুবিধা নিতেই পারেন!
যদিও বর্তমানে অধিক ইলেকট্রনিকস সেগমেন্টের প্রোডাক্ট নিয়ে রিয়েলমি গ্লোবাল ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। রিয়েলমি ব্র্যান্ড সম্পর্কে আপনার মতামত কি? তা আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনে আপরা আপনার মতামতের আশায় থাকব ।
অপো’র চেয়েও বড় এটি!
শাওমির স্মার্টফোনগুলো শুরু থেকেই অপো’কে টেক্কা দিচ্ছিলো। হুমকিস্বরুপ হয়ে যাচ্ছিলো শাওমির এগ্রেসিভ প্রাইসিং এর ফলে ভারতের বাজারে মার্কেট শেয়ার বজায় রাখা অপো’র জন্য । এই সমস্যা সমাধানেই মূলত রিয়েলমি’কে অপো এর সাব-ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই রিয়েলমির জনপ্রিয়তার জের ধরে এটিকে স্বাধীন ব্র্যান্ড এ রুপ দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে ভারতে ডিভাইস বিক্রির দিক দিয়ে মাদার-ব্র্যান্ড অপোকে ছাড়িয়ে যায় রিয়েলমি ২০২১ সালেই । এপ্রিল থেকে জুন ২০২১ সময়কালে ভারতে অপো ৩.৮ মিলিয়ন স্মার্টফোন বিক্রি করেছিল। যেখানে রিয়েলমি বিক্রি করেছিল ৪.৯ মিলিয়নস্মার্টফোন।
রিয়েলমি প্রধান কার্যালয় এবং সিইও কে
স্কাই লি এক সময় অপো’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন বর্তমানে তিনি রিয়েলমি প্রতিষ্ঠানে। এবং তিনি অপো ইন্ডিয়ারও প্রধান ছিলেন। শুরু থেকেই রিয়েলমির প্রধান কার্যালয় ভারতে অবস্থিত ছিল। এরপরে ২০১৯ এ চীনেও রিয়েলমি আরেকটি কার্যালয় চালু করেছে।
বর্তমানে রিয়েলমি এর সিইও হলেন মাধব শেঠ, যিনি একজন ভারতীয়। চীনা নাগরিক স্কাই লি এখন রিয়েলমির গ্লোবাল সিইও হিসেবে দায়িত্বরত আছেন বর্তমানে।
রিয়েলমির সহপ্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন মাধব শেঠ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট। রিয়েলমি এর সিইও হওয়ার আগে তিনি অপো’র সেলস ডিরেক্টর ছিলেন। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে অপো এফ৭ ডিভাসটি বাজারে আনার ২ মাস পর পরই রিয়েলমি এর সিইও পদে মাধব শেঠকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
রিয়েলমি ডটকম ডোমেইনের বয়স হচ্ছে ২৩ বছরের বেশি!
রিয়েলমি এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর ডোমেইন, অর্থাৎ realme.com এর বয়স ২৩বছরেরও বেশি। ১৯৯৭ সালে কোনো এক ব্যক্তি এই ডোমেইনটি ক্রয় করেছিলেন। পরবর্তীতে রিয়েলমি প্রতিষ্ঠার পর ওই ব্যক্তি থেকে ডোমেইনটি কিনে নেয় বিবিকে ইলেকট্রনিকস। এর আগে রিয়েলমি ওয়েবসাইট ছিল রিয়েলমি ডট নেট।
রিয়েলমি হচ্ছে একটি ভারতীয় স্টার্টআপ!
রিয়েলমির যাত্রা শুরু হয়েছে ভারত থেকে যদিও রিয়েলমির কোম্পানির মালিক চীনা । রিয়েলমি সিইও মাধব শেঠ এক ভিডিও ইন্টারভিউতে বলেন, তারা ভারত থেকে কার্যক্রম শুরু করে যখন সফলতা পান তার পরেই মধ্যপ্রাচ্য এবং অন্যান্য অঞ্চলে ফোন বিক্রি শুরু করেছিল। তিনি আরো বলেন, রিয়েলমির প্রায় ৫০% ডিভাইস বিক্রি ভারতের বাজারেই হয়েছিল (তখনকার ডেটা অনুজাই)।
“ইন্ডিয়া-ফার্স্ট” নীতি অনুসরণ করে চলে রিয়েলমি ব্র্যন্ড। অর্থাৎ তারা ভারতকে অগ্রাধিকার দেয় এবং ভারতেই বেশিরভাগ ডিভাইস ও প্রযুক্তি প্রথম লঞ্চ করেছিল।
আজকে আমরা গুরুত্যপূর্ন তথ্য জা্নতে পারলাম রিয়েলমি সম্পর্কে । আপনাদের কেমন লেগেছে জানাবে অবশ্যই আমাদের শাথেই থাকুন ধ্যন্যবাদ